কোয়ান্টাম অ্যালগরিদম কোয়ান্টাম মেকানিক্সের বৈশিষ্ট্য, যেমন সুপারপজিশন এবং এন্ট্যাঙ্গেলমেন্ট, ব্যবহার করে ক্লাসিকাল অ্যালগরিদমের তুলনায় অনেক দ্রুত এবং দক্ষ সমাধান দিতে পারে। নিচে কিছু বেসিক কোয়ান্টাম অ্যালগরিদমের সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা এবং তাদের কাজ করা পদ্ধতি দেওয়া হলো:
উদ্দেশ্য: একটি ব্ল্যাক-বক্স (অরাকল) ফাংশন f(x)f(x)f(x) চেক করা, যা হয় "ব্যালেন্সড" (অর্থাৎ, ইনপুটের অর্ধেকের জন্য ০ এবং বাকি অর্ধেকের জন্য ১ দেয়) অথবা "কনস্ট্যান্ট" (সব ইনপুটের জন্য একই আউটপুট দেয়)। এই অ্যালগরিদমটি একটি মাত্র কোয়ান্টাম মাপজোকের মাধ্যমে বলে দিতে পারে যে ফাংশনটি ব্যালেন্সড নাকি কনস্ট্যান্ট, যেখানে ক্লাসিকাল কম্পিউটারের ক্ষেত্রে একাধিক চেক লাগবে।
কিভাবে কাজ করে:
১. কিউবিটগুলোকে Hadamard গেট প্রয়োগের মাধ্যমে সুপারপজিশন অবস্থায় নিয়ে যায়। ২. অরাকল (Oracle) ফাংশন প্রয়োগ করে কিউবিটের অবস্থা পরিবর্তন করে, যা f(x)f(x)f(x) এর ওপর নির্ভর করে। 3. পুনরায় Hadamard গেট প্রয়োগ করে এবং কিউবিটের ফলাফল মাপা হয়।
উদাহরণ: ক্লাসিকাল কম্পিউটারের ক্ষেত্রে 2n2^n2n ইনপুট চেক করার প্রয়োজন হতে পারে, কিন্তু Deutsch-Jozsa অ্যালগরিদম কোয়ান্টাম কম্পিউটারে শুধুমাত্র একটি মাপজোকে ফাংশনটির প্রকৃতি বের করতে পারে।
উদ্দেশ্য: একটি অপ্রস্তুত তালিকার মধ্যে থেকে নির্দিষ্ট একটি উপাদান খুঁজে বের করা। ক্লাসিকাল কম্পিউটারে যেখানে NNN উপাদানের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট উপাদান খুঁজতে O(N)O(N)O(N) সময় লাগে, Grover's Algorithm এটি O(N)O(\sqrt{N})O(N) সময়ে করতে পারে।
কিভাবে কাজ করে:
১. সমস্ত কিউবিটকে Hadamard গেট প্রয়োগের মাধ্যমে সুপারপজিশনে নিয়ে যাওয়া হয়। 2. অরাকল ফাংশন প্রয়োগ করে সেই উপাদানটিকে চিহ্নিত করা হয় যা খোঁজা হচ্ছে। 3. Grover Diffusion Operator প্রয়োগ করা হয়, যা কিউবিটের অবস্থা আমপ্লিফাই করে, যাতে খোঁজা উপাদানের সম্ভাবনা বাড়ে। 4. এই প্রক্রিয়াটি N\sqrt{N}N বার পুনরাবৃত্তি করা হয়।
উদাহরণ: ধরুন একটি ১০০ উপাদানের তালিকা রয়েছে। ক্লাসিকাল কম্পিউটারে গড়ে ৫০টি চেক করার পর একটি উপাদান খুঁজে পাওয়া যায়। কিন্তু Grover's Algorithm এটি মাত্র প্রায় ১০ বার চেক করে খুঁজে পেতে পারে, যা অনেক বেশি দ্রুত।
উদ্দেশ্য: বড় সংখ্যার ফ্যাক্টরাইজেশন। ক্লাসিকাল কম্পিউটারে বড় প্রাইম ফ্যাক্টরাইজেশন একটি জটিল এবং সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া। শোর অ্যালগরিদম (Shor's Algorithm) কোয়ান্টাম কম্পিউটারে বড় সংখ্যাগুলোর ফ্যাক্টর বের করতে অসাধারণ দ্রুত কাজ করে, যা কোয়ান্টাম ক্রিপ্টোগ্রাফির জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।
কিভাবে কাজ করে:
১. একটি সংখ্যা NNN নেওয়া হয় যা ফ্যাক্টরাইজ করা হবে এবং একটি এলোমেলো সংখ্যা aaa নেওয়া হয় যা NNN-এর সাথে কো-প্রাইম (অর্থাৎ, তাদের গ্রেটেস্ট কমন ডিভাইসর (GCD) ১)। 2. কোয়ান্টাম ফোরিয়ার ট্রান্সফর্মের (Quantum Fourier Transform) মাধ্যমে axmod Na^x \mod NaxmodN এর পিরিয়ড বের করা হয়। 3. পিরিয়ড থেকে NNN-এর ফ্যাক্টর নির্ধারণ করা হয়।
উদাহরণ: ক্লাসিকাল অ্যালগরিদমের জন্য বড় সংখ্যার ফ্যাক্টর বের করতে যে সময় লাগে (যেমন, RSA এনক্রিপশন), শোর অ্যালগরিদম কোয়ান্টাম কম্পিউটারে অনেক কম সময়ে এটি করতে পারে, যার কারণে কোয়ান্টাম কম্পিউটিং বর্তমান এনক্রিপশন পদ্ধতিগুলোর জন্য একটি বড় হুমকি।
এই অ্যালগরিদমগুলো কোয়ান্টাম কম্পিউটিংয়ের শক্তি এবং সম্ভাবনা বোঝায়, এবং কিভাবে কোয়ান্টাম কম্পিউটার ক্লাসিকাল কম্পিউটারের তুলনায় দ্রুত সমস্যার সমাধান করতে পারে তা প্রদর্শন করে।
Read more